সাশ্রয়ীমূল্যে ডিম, দুধ, মাছ ও মাংসের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে
সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধ করুন
আয়োজনে: ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (FIAB)
২২ সেপ্টেম্বর ২০২১
আস্সালামু আলালাইকুম। শুভ সকাল। দেশের স্বনামধন্য ও জনপ্রিয় সংবাদ-মাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ আপনাদের সকলকে আজকের ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি। অসংখ্য কাজের মাঝেও আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে এখানে উপস্থিত হওয়ার জন্য আপনাদের সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আপনারা অবগত আছেন যে, সাশ্রয়ী মূল্যে দেশের মানুষের জন্য ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের উৎপাদন ও যোগান নিশ্চিত করছে দেশীয় পোল্ট্রি, মৎস্য ও ডেইরি খাত। সাম্প্রতিক সময়ে হাঁস-মুরগি, মৎস্য ও গবাদিপশুর খাদ্য তৈরির অত্যাবশ্যকীয় একটি উপকরণ ‘সয়াবিন মিল’ রপ্তানির অনুমতি প্রদান করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে খামারি ও উদ্যোক্তাদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
আজ আমরা আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি মূলত: আমাদের দাবির স্বপক্ষে যৌক্তিক কারণগুলো আপনাদের কাছে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরার জন্য।
সুপ্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে- পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রাণিখাদ্য তৈরিতে প্রধান যে কাঁচামালগুলো ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে- ভ‚ট্টা, সয়াবিন মিল, গম, আটা, ময়দা, চাউলের কুড়া, ফিশ মিল, সরিষার খৈল, তৈল, ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদি অন্যতম। এর মধ্যে দু’টি উপকরণ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় (১) ভ‚ট্টা এবং (২) সয়াবিন মিল। ভ‚ট্টার ব্যবহার প্রায় ৫০-৫৫ শতাংশ এবং সয়াবিন মিলের পরিমান প্রায় ২৫-৩৫ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছর থেকে ভ‚ট্টার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে দেশীয় মোট চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশ ভ‚ট্টা দেশে উৎপাদিত হচ্ছে। তবে সয়াবিনের উৎপাদন নিতান্তই নগণ্য।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আমাদের দেশের ফিড মিলগুলোতে ব্যবহৃত কাঁচামালের অধিকাংশই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বর্তমানে চাহিদাকৃত ‘সয়াবিন মিল’ দেশীয় সয়াবিন তৈল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও ভারত, আমেরিকা, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা প্রভৃতি দেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে ‘সয়াবিন মিল’ এর মোট চাহিদা বছরে প্রায় ১৮-২০ লক্ষ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৭৫-৮০ ভাগ দেশীয় সয়াবিন তৈল উৎপাদকারি প্রতিষ্ঠান হতে এবং অবশিষ্ট ২০-২৫ ভাগ আমদানির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, দেশে উৎপাদিত সয়াবিন মিলের একমাত্র ক্রেতা হচ্ছে পোল্ট্রি, মৎস্য, ক্যাটল ও ফিড উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান ও সাধারন খামারিবৃন্দ।
সয়াবিন মিলের রপ্তানির সিদ্ধান্তে খামারিরা উদ্বিগ্ন কারণ ডিম, মাছ, মুরগি উৎপাদনে মোট খরচের প্রায় ৭০-৭৫ শতাংশ খরচই হয় ফিড ক্রয় বাবদ। তাই ফিডের মূল্য বৃদ্ধি পেলে খামারিদের উৎপাদন খরচ বাড়ে; অন্যদিকে খরচের বিপরীতে পণ্যের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় বড় অংকের লোকসানের মুখে পড়তে হয় তাঁদের।
দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণের কথা বিবেচনায় নিয়ে সাশ্রয়ীমূল্যে সয়াবিন তৈল, পোল্ট্রি, মৎস্য ও গরুর খাদ্যের প্রধান উপাদান সয়াবিন মিলের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সরকার শূণ্য শুল্কে বা করমুক্ত সুবিধায় ‘সয়াবিন সীড’ আমদানির অনুমতি প্রদান করেছেন। ‘সয়াবিন সীড’ থেকে সয়াবিন তৈল বের করার পর অবশিষ্ট খৈল থেকে তৈরি হয় ‘সয়াবিন মিল’। দেশের মানুষের স্বার্থে শূণ্য শুল্ক সুবিধায় আনা সেই সয়াবিন সীড থেকে উৎপাদিত সয়াবিন মিলই এখন ৩-৪টি সয়াবিন তৈল উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান মুনাফার স্বার্থে রপ্তানি করছে। অতীতে কখনও ভারতে সয়াবিন সীড কিংবা সয়াবিন মিল রপ্তানি হয়নি বরং ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য পরিমান সয়াবিন মিল আমদানি করা হয়ে থাকে।
অতীতে চাহিদা মেটাতে সিংহভাগ সয়াবিন মিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হলেও এলসি করা, অতিরিক্ত জাহাজ ভাড়া, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে জটিলতা, ল্যাব টেস্টের জটিলতা, বিলম্ব মাশুল, ইত্যাদি নানাবিধ জটিলতার কারণে সয়াবিন মিল আমদানির পরিমান সাম্প্রতিক বছরগুলো ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়েছে।
বর্তমানে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে সয়াবিন মিল আমদানি করতে হলে এলসি করা থেকে শুরু করে বন্দরে মাল এসে পৌঁছানো পর্যন্ত সময় লাগে প্রায় ৫০ দিন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সময় লাগে ৭০ দিন। ভারত থেকে সড়কে ৭-১০ দিন, কনটেইনারে ১৫-২০ দিন। বিশ্ববাজারে এবং সেই সাথে পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে সয়াবিন মিলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সে দেশের পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস শিল্প রক্ষা করতে এবং স্বল্পতম সময়ে বাংলাদেশ থেকে সয়াবিন মিল আমদানির জন্য আগ্রহ বেড়েছে ভারত, নেপাল প্রভৃতি দেশের ফিড প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর। আমাদের উদ্বৃত্ত থাকলে রপ্তানি করতে কোন অসুবিধাই ছিলনা কিন্তু দেশের চাহিদা যখন দেশীয়ভাবে পূরণ করা যাচ্ছে না; তখন রপ্তানির সিদ্ধান্ত কেন?
বাংলাদেশী গণমাধ্যমে “সয়াবিন মিল রপ্তানি রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার” এমন খবর জাতীয় সংবাদ-মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় সয়াবিন মিল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সয়াবিন মিলের দাম কেজি প্রতি ১০-১২ টাকা বৃদ্ধি করেছে; সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে; ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সয়াবিন মিলের সংকটের কারণে অনেক ফিডমিলের উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে; উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। প্রচুর খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে; খামারি পর্যায়ে অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে।
সাংবাদিক বন্ধুগণ, বাংলাদেশ হতে নেপাল ও ভারতে সয়াবিন মিল রপ্তানি শুরুর সাথে সাথে আমরা বাণিজ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে অবিলম্বে সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধের জন্য আবেদন জানাই। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় হতে সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধের সুস্পষ্ট মতামতসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি প্রদান করলেও কোন কিছুই আমলে না নিয়ে একতরফা ভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানির সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছে এবং ভারত ও নেপালে সয়াবিন মিলের রপ্তানি চালু রয়েছে। শুধু তাই নয়, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সয়াবিন মিল বন্ধের আদেশ প্রদান করলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপের কারণে তা পুনরায় প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বাণিজ্য উন্মুক্ত থাকা সত্তে¡ও নিজের দেশের স্বার্থ, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার স্বার্থে অনেক দেশই আমদানিযোগ্য বিভিন্ন পণ্যের ওপর নানা ধরনের কর ও শুল্ক আরোপ করার মাধ্যমে আমদানি নিরুৎসাহিত করে থাকে। এমনকি অনেক সময় রপ্তানিও বন্ধ করে দেয়। ভারতেও অভ্যন্তরীণ সংকট ও মূল্য বৃদ্ধি হলে চাউল, পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হয়; অথচ আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অন্য দেশের শিল্পের স্বার্থে রপ্তানি উন্মুক্ত করে দিয়ে কার্যত দেশীয় ডিম, দুধ, মাছ, মাংস ও ফিড উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
সাংবাদিক বন্ধুগণ, আপনাদের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফিড তৈরিতে ব্যবহৃত উপকরণগুলোর দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
Comparetive Feed Price Statement Between October, 2020 to September 2021 | ||||
Sl. | Name of Item | Aug.2020 | Aug.2021 | % Price Increase in 2021 |
1 | Fish Meal | 100.00 | 132.00 | 32.00 |
2 | Soybean Meal | 38.25 | 54.00 | 41.18 |
3 | Maize | 20.00 | 32.00 | 60.00 |
4 | Rice Polish | 22.70 | 25.45 | 12.11 |
5 | DORB | 19.00 | 19.50 | 2.63 |
6 | MOC | 25.00 | 37.25 | 49.00 |
7 | Moida | 28.50 | 37.00 | 29.82 |
8 | Atta | 23.45 | 31.00 | 32.20 |
9 | Soybean Grain | 42.50 | 58.50 | 37.65 |
10 | Soybean Oil | 87.00 | 142.50 | 63.79 |
11 | Palm Oil | 82.90 | 135.00 | 62.85 |
12 | Lime Stone | 9.00 | 11.50 | 27.78 |
13 | LimeStone Gra. | 9.30 | 12.00 | 29.03 |
14 | Poultry Meal | 70.00 | 84.00 | 20.00 |
15 | L-Lysin | 135.75 | 170.00 | 25.23 |
16 | DLM | 225.00 | 275.00 | 22.22 |
Total Average | 34.22 |
Feed Price Increase Between October, 2020 To September 2021 | |||||
SL. | Name Of Feed | Avarage Price/Kg | Avarage Price/KG | Feed Price | Feed Price |
1 | Floating Fish Feed | 54.50 | 51.50 | 3.00 | 5.83 |
2 | Sinking Fish Feed | 42.20 | 39.20 | 3.00 | 7.65 |
3 | Cattle Feed | 34.75 | 32.90 | 1.85 | 5.62 |
4 | Poultry Feed Broiler | 52.00 | 48.00 | 4.00 | 8.33 |
5 | Poultry Feed Layer | 43.20 | 39.00 | 4.20 | 10.77 |
6 | Poultry Feed Sonali/Cock | 46.90 | 42.70 | 4.20 | 9.84 |
উপরে প্রদত্ত ১ নম্বর টেবিল দেখা যাচ্ছে ২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে কাঁচামালের দাম ৩৪.২২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কাঁচামালের দাম ৩০-৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে খুব স্বাভাবিক নিয়মেই ফিডের দাম ২০-২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা কিন্তু খামারিদের কথা বিবেচনায় রেখে ফিড প্রস্তুতকারক কোম্পানীগুলো ফিডের দাম মাত্র ৬-৮ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। এতে দেশের সবগুলো ফিড প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান লোকসানের মুখে পড়েছে; বেশ কিছু ছোট ও মাঝারি ফিড মিল বন্ধের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায়, দ্রæততম সময়ে সয়াবিন মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত না নিলে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। ডিম, দুধ, মাছ, মুরগি, গরু-ছাগলের মাংসের দাম আরও বৃদ্ধি পাবে। দেশের ১৭ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি এবং পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস্যখাতের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় ২ কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে; দেশীয় পোল্ট্রি, মৎস্য ও ডেইরিখাত মুখ থুবড়ে পড়বে।
সাংবাদিক বন্ধুগণ, ‘সয়াবিন মিল’ রপ্তানির সিদ্ধান্তই নয় বরং আরও কয়েকটি সিদ্ধান্তের কারনে আমাদের সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আপনাদের সামনে ৩টি বিষয় সংক্ষেপে উপস্থাপন করছি।
(১) “পাটের বস্তায় মৎস্য ও প্রাণিখাদ্য মোড়কীকরণের বাধ্যবাধকতা”
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের এসআরও নম্বর ২৪৭-আইন/২০১৮, তারিখ: ২আগস্ট ২০১৮, মূলে পোল্ট্রি ও মৎস্য খাদ্য মোড়কীকরণে পাটজাত ব্যাগের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফিআব) -এর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বারংবার আপত্তি জানানো জানানো হয়েছে। আমরা বলেছি- জলীয়বাস্পের সংস্পর্শে এলে মৎস্য ও প্রাণিখাদ্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। সে কারনে পৃথিবীর সব দেশেই পিপি ওভেন ব্যাগেই মৎস্য ও পশুখাদ্যের মোড়কীকরণ করা হয়ে থাকে। পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহারের প্রজ্ঞাপনটি সংশোধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও অনুরোধ জানানো হয়েছে কিন্তু কোন সমাধান হয়নি।
(২) বিএসটিআই এর মান সনদ
পূর্বে মৎস্যখাদ্য ও পশুখাদ্য প্রস্তুতকারক শিল্পের জন্য বিএসটিআই এর মান সনদ গ্রহণের কোন বাধ্যবাধকতা ছিলনা। শিল্প মন্ত্রণালয়েরর ০৪ জুলাই/২০১৮ তারিখের এসআরও নম্বর ২২০-আইন/২০১৮ মূলে এ পণ্য দু’টিকে বিএসটিআই এর মান সনদ গ্রহণে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন-একটি শিল্পখাতের দু’টি ভিন্ন রেগুলেটরি অথোরিটি থাকা কিংবা দ্বৈত প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ আইনসম্মত নয়, আমরা যেহেতু মৎস্যখাদ্য ও পশুখাদ্য আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তাই আমাদের সেক্ষেত্রে বিএসটিআই এর মান সনদ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থাকা যৌক্তিক নয়। আমরা মনে করি এ বিষয়টির দ্রæত সুরাহা হওয়া প্রয়োজন।
(৩) আমদানিকৃত পণ্যের বাধ্যতামূলক ল্যাব টেস্ট
আমদানিকৃত পণ্যের বাধ্যতামূলক ল্যাব টেস্ট নিয়েও জটিলতা রয়েছে। এমন অনেক পণ্য আছে যেগুলোর ল্যাব টেস্টের কোনই প্রয়োজন নেই। এ ধরনের পণ্যের তালিকা আমরা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়েছি কিন্তু কোন লাভ হচ্ছেনা। এতে একদিকে যেমন পণ্য খালাসে প্রচুর সময় ব্যয় হচ্ছে; অন্যদিকে অনর্থক অর্থ ব্যয় বাড়ছে। তাছাড়া ডেমারেজের কারনে প্রচুর পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে।
গণমাধ্যমের কাছে প্রত্যাশা
আমরা আশা করব ঢাকাসহ সারাদেশের সংবাদপত্র, অনলাইন, টিভি, রেডিওসহ সব ধরনের গণমাধ্যম আমাদের সহায়তায় এগিয়ে আসবেন। জাতীয় প্রয়োজনে আমাদের গণমাধ্যম অতীতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকে এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণ করেছে। সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধের ইস্যুটিকেও এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহŸান জানাচ্ছি। সেই সাথে আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করার জন্য সাংবাদিক বন্ধুদের প্রতি বিনীত অনুরোধ কারছি। বিভিন্ন সংকটকালীন সময়ে আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আশাকরি এবারও আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন।
আমরা দীর্ঘদিন ধরে করোনাকালীন সংকটের মধ্যে আছি। দেশের িিচকিৎসা বিজ্ঞানীরা এ সময় অধিক পরিমানে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিম গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করছেন। আমরা খামারিদের সাথে নিয়ে এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখে দেশের মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সরকারকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। বর্তমানে কর্মসংস্থান সংকুচিত হওয়ায় সাধারন মানুষের ক্রয় সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। এমতাবস্থায় সাশ্রয়ীমূল্যের প্রাণিজ আমিষের মূল্যবৃদ্ধি হলে ‘খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা’ উভয়ই হুমকীর মুখে পড়বে।
আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা অবিলম্বে সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের যুক্তিসঙ্গত এবং গ্রহণযোগ্য দাবি মানা না হলে আমরা খামারি, উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্ট সেক্টরগুলোর সবাইকে সাথে নিয়ে আগামীতে বৃহত্তর কর্মসূচী গ্রহণ করবো।